ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

নারীর স্বাধীনতা

মিন্নির কারখানায় তৈরি হচ্ছে আইল্যাশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৪
মিন্নির কারখানায় তৈরি হচ্ছে আইল্যাশ মিন্নির কারখানায় চোখের কৃত্রিম পাপড়ি তৈরিতে ব্যস্ত নারীশ্রমিকেরা

নীলফামারী: নারী সৌন্দর্যের অন্যতম অনুষঙ্গ চোখের পাপড়ি বা আইল্যাশ। আধুনিক নারীদের কাছে এর চাহিদা আকাশছোঁয়া।

আর এই চোখের কৃত্রিম পাপড়ি তৈরি হচ্ছে উত্তরের জনপদ নীলফামারীর সৈয়দপুরে।  

নারী উদ্যোক্তা মিন্নি আকতার মিথুনের (২২) ‘মিন্নি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ এসব পাপড়ি তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করছেন। এতে করে কারখানায় যেমন নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে; তেমনি আসছে বৈদেশিক মুদ্রাও।

সৈয়দপুর শহরের উপকণ্ঠে ওয়াপদা মোড়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ‘মিন্নি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’। সেখানে ২৫ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ সকাল ৮টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তৈরি করছেন চোখের কৃত্রিম পাঁপড়ি। প্রতিদিন কাজ করে শ্রমিকরা পাচ্ছেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এতে করে সংসারে সহযোগিতা করতে পারছেন নারীরা।  

এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারীদের বেশিরভাগই সদর উপজেলার সৈয়দপুর উপজেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার।

এ কারখানার শ্রমিক তাসমিন আক্তার (২৫), লামিয়া (২০), নায়না (২৪), আইরিন (২১) ও মুশকান (২৪) জানান, এখানে কাজ করে আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারছি। আগে সবাই প্রশিক্ষণ নিয়েছি, তারপর এ কাজে যোগদান করেছি। এখানে নিরাপত্তার মাধ্যমে আমাদের কাজ করানো হচ্ছে।

জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের নিমবাগান এলাকার অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা একেএম মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে মিন্নি আকতার মিথুন। ভালোবেসে ২০২৩ সালের  ১৮ জুলাই চীনের গুয়ানডং শহরের চিশুয়ী টাউনের লীন সিংকের ছেলে লীন ঝানরুইকে (৪৭) বিয়ে করেন মিন্নি।

বিয়ের পর লীন ঝানরুই মুসলমান হয়ে নাম রাখেন লাবিব। স্বামী-স্ত্রী মিলে গড়ে তোলেন এই পাপড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উত্তরা ইপিজেডের টিএইচটি-স্পেস ইলেট্রিক্যাল কোম্পানিতে টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন চীনা নাগরিক লীন ঝানরুই। একই কোম্পানিতে চাকরি করতেন মিন্নি। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে সৈয়দপুর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এক সহকর্মীর বিয়ের অনুষ্ঠানে লীন ঝানরুই ও মিন্নির পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। তারপর বিয়ে।

নারী উদ্যোক্তা মিন্নি আকতার মিথুন ও তার স্বামী চীনা নাগরিক লীন ঝানরুই ওরফে লাবিব

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মিন্নি আকতার মিথুন বলেন, চাইনিজ টিকটক দেখে এ কাজে উদ্বুদ্ধ হই। স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে গড়ে তুলি এই চোখের পাপড়ির কারখানাটি। প্রতিদিন এই কারখানা থেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার চোখের পাপড়ি তৈরি হচ্ছে। যা পরবর্তীতে চীনে পাঠানো হচ্ছে। দেশের অনেকে চোখের পাঁপড়ি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।  

পরবর্তীতে মেশিনপত্র কিনে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।  

তিনি বলেন, এই পাপড়ি তৈরির সরঞ্জাম আনা হচ্ছে চীন থেকে। কারখানাটিতে আমার স্বামী উপদেষ্টা ও বাবা চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।